হবিগঞ্জে কৌশলে ক্রেতাদের পকেট কাটছেন পেয়াজ ব্যবসায়ীরা
তারিখ: ১৬-সেপ্টেম্বর-২০২০
দিদার এলাহী সাজু ॥

* মাত্র ১দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে দ্বিগুন * ৬৫ টাকায় বিক্রি করলেও রশিদ দেয়া হচ্ছে ৪৫ টাকার * ‘চোরের মায়ের বড় গলার মত'- একে অন্যের ঘাড়ে দুষ চাপাচ্ছেন ‘পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা’ * জেলা প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের বৈঠক আজ * প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাবে-জেলা প্রশাসক

হবিগঞ্জে কৌশলে ক্রেতাদের পকেট কাটছেন সুযোগ সন্ধানী অসাধু পেয়াজ ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, চোরের মায়ের বড় গলার মত একে অন্যের ঘাড়ে দুষ চাপাচ্ছেন পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা। এমন তথ্যই বেড়িয়ে এসেছে সমাচারের অনুসন্ধানে। এ অবস্থায় খোদ প্রশাসনকেই ভাবিয়ে তুলছে বিষয়টি। জানা যায়, হবিগঞ্জের বাজারে মাত্র ১ দিনের ব্যবধানে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে পেয়াজের দাম। সোমবার যে পেয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি, গতকাল মঙ্গলবার একই পেয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাতে কে,বা-কারা হঠাৎ করেই পেয়াজের দাম বাড়ার গুজব ছড়িয়ে দেয়। এমন গুজবে গতকাল মঙ্গলবার বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। যার প্রয়োজন ১ কেজি তিনিও কিনেন ৫ কেজি। ফলে বাজারে হঠাৎ করে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায় পেয়াজের চাহিদা। এ অবস্থায় দাম বাড়িয়ে দেন এক শ্রেণীর সুযোগসন্ধানী অসাধু ব্যবসায়ী।

হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজারের ব্যবসায়ী আঃ কাইয়ূম জানান, যে পেয়াজ ১দিন আগেও ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, সেই পেয়াজ আজ (মঙ্গলবার) ৮০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, তাদের কিছুই করার নেই। বেশি দামে কিনতে হয়, তাই বেচতে হয় বেশী দামে। তবে শহরের ঐতিহ্যবাহী শরীফ স্টোরের ম্যানেজার দ্বীন মোহাম্মদ লিটন জানান, তারা বিক্রি করছেন ৬৫ টাকা দরে। চৌধুরী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী জামাল মিয়া ও মিনহাজ উদ্দিন জানান, তারা পাইকারী দোকানদারদের কাজ থেকে ৬৫ টাকা দরে ক্রয় করে ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। তাদের অভিযোগ, ৬৫ টাকা দিয়ে কিনলেও তাদের রশিদ দেয়া হয় ৪৫ টাকার। বাধ্য হয়ে এভাবেই তাদের কিনতে হয়। 

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে শহরের নারিকেল হাটার মেসার্স রকি এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারী পাইকারী ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান রকি জানান, ভারতীয় পেয়াজ আমদানী বন্ধ হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমেছে, পাশাপাশি বেড়েছে চাহিদা। ফলে কোথাও কোথাও দাম কিছুটা হেরফের হতে পারে।  তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা মিথ্যে বলছে, এটা তাদের কৌশল। তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত তারা ৪৫ টাকা কেজি দরেই বিক্রি করেছেন।

জানতে চাইলে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, অভিযোগ গুলো তিনি শুনেছেন। বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন তিনি। এ লক্ষে আজ সকালে তার কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করবেন। তিনি জানান, অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামানো হবে।