আজমিরীগঞ্জের শরীফনগর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মোঃ মশিউর রহমান রফি মিয়া (৩২) এর বিরুদ্ধে নানা ধরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে একই এলাকার শরীফনগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত- সাবাজ মিয়ার পুত্র মোঃ নবীহোসেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে গত সোমবার একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ছাড়া বিভাগীয় উপ পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা হবিগঞ্জ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আজমিরীগঞ্জ ও প্রধান শিক্ষক, শরীফনগর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুলিপি প্রেরণ করেছেন। অভিযোগপত্রে জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন শরীফনগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত- সালাউদ্দিন মিয়ার পুত্র মোঃ মশিউর রহমান রফি মিয়া (৩২) এলাকার শরীফনগর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ দপ্তরি হিসেবে কর্মরত আছে। সে বিগত ২০২৩ সালের ২২ জুলাই শনিবার বাজারের শুটকি ব্যবসায়ী মোঃ সেলিম মিয়ার হত্যাকান্ডে সরাসরিভাবে জড়িত। যা মামলার এজাহার, সুরতহাল রিপোর্ট ও চার্জশীটে প্রমাণিত। আজমিরীগঞ্জ থানার এফআইআর নং- ০৫ তাং- ২৪/০৭/২০২৩ ইং, জিআর নং- ৪৫/২৩।
তার বিরুদ্ধে উক্ত হত্যা মামলার আগেও কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। একই থানার এফআইআর নং- ১ তাং- ০৫/১০/২০০৭ ইং, এফআইআর নং- ৩৬/৮৭, তাং- ২৭/১১/২০১৫ ইং। মামলায় জড়িত থাকার কারণে নিজ কর্মস্থলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত থাকে। সে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক শিক্ষিকাগণের কোন ধরণের আদেশ নির্দেশ পালন করে না। কর্মস্থলে নিজ দ্বায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও সামান্য অর্থের বিনিময়ে ওই কাজ অন্য এক মহিলাকে দিয়ে করিয়ে নেয়। নিয়মিতভাবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেনা। হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে, দপ্তরি রফি মিয়া না দেখিয়ে বিভিন্ন বাহানা শুরু করে। দপ্তরি কোথায় আছে? জানতে চাইলে, একবার বাজারে, আরেকবার স্কুলের কাজে বাইরে গেছে বলে জানানো হয়। একদিনে সারা মাসের স্বাক্ষর করে বেতন উত্তোলন করে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, তার বিরুদ্ধে আমি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো না। প্রধান শিক্ষক বা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানান। নিয়মানুযায়ী দিবারাত্র সার্বক্ষণিক দ্বায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও, তা সে করেনা। মধ্যরাতে সে এলাকার বখাটেদের নিয়ে বিদ্যালয় কক্ষে মাদক সেবন করে। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে গরুর বাজার এলাকার চায়ের দোকানে বসে ভারতীয় অনলাইন ভিত্তিক শিলং বা এন্ডিং জুয়াখেলা নিয়ে ব্যস্থ সময় পার করে। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে মামলা রয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে এ ব্যাপারে একাধিকবার অবগত করা হলেও ওই দপ্তরির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তার এক ভাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। আরেক ভাই পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি। এ কারণে ভয়ে এর আগে কেউই তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়েরের সাহস করেনি। তাই উপরোল্লিখিত অভিযোগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা সহ অপসারণের দাবি জানানো হয়। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাসিবুল ইসলাম বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।