চুনারুঘাটে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে সাড়ে ৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ॥ অতঃপর বদলী
তারিখ: ১-অগাস্ট-২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার ॥

চুনারুঘাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে ১৫টি চা বাগানের ৩শ জন সাধারণ মানুষের সাড়ে ৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগিরা তার বিরুদ্ধে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে অতঃপর তাকে মৌলভীবাজারে বদলী করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে বদলী ঠেকাতে তিনি উচ্চপদস্থ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। অন্যদিকে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে সচেতন নাগরিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া।

অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালে মে মাসে চুনারুঘাট ফাড়ি চা বাগানসহ মোট ১৫টি বাগানের প্রতিটি বাগান থেকে সেনিটেশন উদ্বুদ্ধ সভা করনের জন্য মহিলা ও পুরুষসহ ২০ জনের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেন সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন। এতে উক্ত উদ্বুদ্ধকরন কর্মশালায় জনপ্রতি সম্মানীভাতা ও টিফিনভাতাসহ ২ হাজার টাকা এবং প্রতি বাগানের ডেকুরেশন ও যাতায়াতসহ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। এতে করে হিসাব অনুযায়ী প্রতিটি বাগানের ২০ জনের জন্য ৪০ হাজার ও ডেকুরেশন বাবদ ১০ হাজার টাকা হলে মোট ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ফলে ১৫টি বাগানের ৩শ জনের জন্য ৬ লাখ টাকা ও ১৫টি বাগানের ডেকুরেশন বাবদ ১০ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা সরকারী বরাদ্দ আসে। এতে সর্বমোট দাড়ায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা। পরে

জুন মাসে তাদের নামে ভুয়া বিল ভাউচার ও মাস্টাররোল দাখিল করে উক্ত টাকা উত্তোলন করেন সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন। তবে তিনি ১৫টি বাগানের ৩শ জন মানুষকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা না দিয়ে আত্মসাত করেন। পরবর্তিতে বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগিরা তার অফিসে যোগাযোগ করলে উক্ত টাকাগুলো অচিরেই তাদেরকে দেয়া হবে বলে আশ^াস প্রদান করা হয়। এরপর  দীর্ঘ দেড় বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তাদেরকে টাকা গুলো প্রদান করেনি সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বাগানের শ্রমিকরা গরীব, অসহায়,  দুঃস্থ, খেটে খাওয়া মানুষ। দৈনিক হাজিরা (তৎকালীন) ১২০টাকা পান। এতে জীবিকা নির্বাহ করতে তাদের খুব কষ্ট হয়। তাদের পাপ্য বুঝিয়ে দেয়া হলে খুবই উপকৃত হবেন। পাশাপাশি হবিগঞ্জ জেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে যোগাযোগ করলে আত্মসাতকৃত টাকার বিল ভাউচার খোঁজে পাওয়া যাবে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। উল্লেখিত বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া যাবে দাবী করে ভুক্তভোগিরা সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিনের দূর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে জোর দাবী জানান।

এদিকে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৫ জুলাই সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিনকে মৌলভীবাজারে বদলী করেছে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ। তবে বদলী ঠেকাতে তিনি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে উপজেলাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ। স্থানীয়রা জানান, ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ তিনি লাখাই উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন। এর পর থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত তিনি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছেন। এতে তার কুঠির জোর নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চুনারুঘাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, ‘টাকা আত্মসাত ও অভিযোগের বিষয়টি আমি অবগত নই। গত ২৫ জুলাই আমাকে মৌলভীবাজারে বদলী হয়েছে, আমি শিগগিরিই সেখানে যোগদান করবো’। 

প্রথম পাতা