চরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ
তারিখ: ১৪-জুলাই-২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার \

 হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ২২নং চরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রাত্রী রানী রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। বিগত সরকারের আমলে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংসাপত্র বাবদ ১০০ টাকা, ইউনিক কার্ড এ রক্তের গ্রæপ উল্লেখযোগ্য হওয়ায় হবিগঞ্জ শহরের প্রাইভেট ক্লিনিক এর সাথে ৫০ টাকা (প্রতি শিক্ষার্থী) প্রদান পূর্বক চুক্তিবদ্ধ হয়ে সকল বাচ্চাদের রক্তের গ্রæপ নির্ণয়ের জন্য নিয়েছেন ১০০ টাকা যা স্কুলের সহকারী শিক্ষকসহ ছাত্রছাত্রীরা অবগত রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চলছে নানান গুঞ্জন। গ্রামের সাধারণ মানুষকে তোয়াক্কা না করেই নিজের পারিবারিক শক্তিকে পুঁজি করে ভয় ভীতি দেখিয়ে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করছেন রাত্রী রানী রায়। এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসির। 
জানা যায়, তার স্বামীকে ব্যবহার করে সে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। এতে স্বামী তার নিজের স্ত্রীর অফিসের রিপোর্টিং অফিসার বলে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে যা তা বুজিয়ে তাদের দুর্নীতির নীল নকশা বাড়িয়ে চলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিগত কমিটি গঠন এর জন্য এক অভিভাবক সমাবেশ আয়োজন করলেও কোনো অভিভাবকের মতামত তোয়াক্কা না করেই নিজের মনগড়া ভাবে জমা দেন প্রস্তাবিত কমিটি। এতে কিছু দুষ্কৃতিকারী লোককে জড়িয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে স্কুলে যোগদানের তারিখ থেকে আজ অবধি কোনো কাজ পরিলক্ষিত হয়নি গ্রামবাসীর। 
ফলে হতাশ হয়ে ছেলে মেয়েদের স্কুল থেকে নিয়ে পাশ্ববর্তী মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দিচ্ছেন অনেক সচেতন অভিভাবক। এতে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেকের থেকেও নিচে নেমে আসে। কিন্তু ওই প্রধান শিক্ষিকা উপজেলা শিক্ষা অফিসে এর সঠিক রিপোর্ট না দিয়ে দিনের পর দিন স্কুলের ১৫২ জন ছাত্র ছাত্রী উপস্থিতি মেইনটেইন করে যাচ্ছেন যা নিতান্তই কাল্পনিক আর গুরুতর অপরাধ। 
গ্রামবাসীর অভিযোগ, উক্ত শিক্ষিকা এই স্কুলে যোগদানের পর থেকে বাচ্চাদের কিংবা স্কুলের পড়ালেখা তো দূরের কথা  স্কুল উন্নয়নের চিন্তাও মাথায় আসে না তার। তাই তারা এই শিক্ষিকার অপসারণসহ যা যা করণীয় সব করতে প্রস্তুত। তারা বলেন তিনি ২০১৭ সালের দিকে যোগদান করলেও বছরের পর বছর স্কুলের একাউন্টে টাকা আসে আবার সেই টাকা উঠানো হয় ঠিক ই কিন্তু স্কুলের কাজে ব্যবহার করার জন্য না বরং প্রধান শিক্ষিকার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার জন্য। এলাকাবাসী আরো জানান, বিগত কিছু দিনের ভিতরে স্কুলের উন্নয়নে ¯িøপের টাকা ব্যতীত প্রায় ৯/১০ লক্ষ টাকা আসলেও এর প্রপার ব্যবহার করেন নি তিনি। 
এ ব্যাপারে এলাকার মানুষ অবগত হলে তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত কান্ড শুরু করেন। বর্তমানে চলমান কাজে নি¤œ মানের সিমেন্ট, না চেকে বালু, কম দামের রড এবং পুরাতন ইট ফ্লোর থেকে তুলে এগুলা দিয়েই ঢালাই এর কাজ সম্পন্ন করেন। প্রায় রাত ১ টা পর্যন্ত চলে ঢালাই এর কাজ কারণ পর দিন ভিজিটে আসার কথা টিও এবং এটিও। তাই তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করেন তিনি। আর এই কাজের তড়িঘড়ি দেখে নজর পরে এলাকার সকল মানুষের। এর পর থেকেই শুরু হয় লংকা কান্ড। এ বিষয়ে যেই কথা বলে তাকেই স্থানীয় প্রভাবশালী দ্বারা হুমকি প্রদান করেন রাত্রি রায়। এমনকি এলাকার জনপ্রতিনিধি তার দুর্নীতির কাছে হার মেনে যায়। 
তার বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষক কিংবা গ্রামের কোনো মানুষ কথা বললে তাকে মামলা দিয়ে জেলে ভরে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। তিনি আরো বলেন, টিও এটিও স্যারকে আমি সব বিষয়ে অবগত করি তাই আপনারা যা খুশি করতে পারেন তাতে কিছু আসে যায় না। উক্ত শিক্ষিকার ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করলেও কোনো প্রকার কার্যকর ভূমিকা পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, উক্ত শিক্ষিকা স্কুলের লোহার তৈরি ৯৬ জোড়া ব্রেঞ্চ বিক্রি করে দেন ২০২১ সালের দিকে। যা সরকারি সম্পদ চুরির সমতুল্য। এবং সাবেক সভাপতির বাড়িতে ব্যাবহার করা হয় স্কুলের দরজা। স্কুলের ব্রেঞ্চের কাট দিয়ে গ্রামের হাতুড়ে মিস্ত্রি দিয়ে নাম মাত্র টাকায় কাজ করিয়ে বড় অংকের বিল বাম হাত দিয়ে স্বাক্ষর করে টাকা নিজের করে নেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। 
আরও জানা যায় যে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রতিটি স্কুলের ন্যায় চরগাঁও স্কুলে প্রজেক্টর ল্যাপটপ আসলেও প্রজেক্টর তার বাসায় এবং ল্যাপটপ তার মেয়ের বাসায় (ঢাকায়) দিয়ে রাখার অভিযোগও পাওয়া যায়। আরও জানা যায়, উক্ত প্রধান শিক্ষিকা অফিস চলাকালীন সময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত না হয়েও বাসায় হাজিরা খাতায় নিয়ে এতে নিয়মিত হাজিরার স্বাক্ষর করেন যা দুর্নীতির অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও রাত্রী রানী রায়ের বিরুদ্ধে তার পুর্বেও কর্মস্থলেও অনিয়ম দূর্নীতির চিত্র ফুঠে উঠে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষিকা রাত্রী রানী রায়কে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

প্রথম পাতা