বাহুবল উপজেলার তারাপাশা গ্রামে অবৈধ প্রভাব কাটিয়ে পুলিশের এসআই মোঃ উজ্জ্বল মিয়ার বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করে আসছিল প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে বাঁধা দেয়ায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার বৃদ্ধ মাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয় প্রভাবশালী মহল। যে কারনে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাদের পরিবার। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ২২ জুন হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। অভিযুক্তরা হলেন, একই গ্রামের মৃত মরতুজ আলীর ছেলে মোঃ আলমগীর ও মোহাম্মদ ওরফে মোঃ জালাল মিয়া। তবে তারা রাস্তা নির্মাণে চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে ফেসবুকে অপ-প্রচার চালাচ্ছে। অভিযুক্ত আলমগীর এর ভাই নাজমুল আলম তার ব্যবহৃত ফেসবুকে মিথ্যা অপ-প্রচার চালাচ্ছে। যে কারণে এলাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। তারা এখনো হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এতে এলাকার সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্র জানায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মকছুদ আলীর ছেলে পুলিশের এসআই মোঃ উজ্জ্বল মিয়া সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় কর্মরত থাকার কারনে বাড়িতে তার বৃদ্ধ মা একা বসবাস করেন। পরিবারে আর কোন সদস্য না থাকায় চাকুরীর পাশাপাশি উজ্জ্বল মিয়া বাড়ি-ঘরসহ পারিবারিক সম্পত্তি দেখাশুনা করেন। তার বসতবাড়ী সংলগ্ন পশ্চিম দিকে মৌজা নারায়নপুর, জেএল নং- ১০৭, খতিয়ান নং- ২২৩, এসএ দাগ নং- ৬৫৪, আরএস দাগ নং- ৬৪১, পরিমান- ১৩ শতাংশ বাড়ী রকম ভূমি রয়েছে। বর্ণিত তফসিল ভুক্ত ভূমি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হইয়া দীর্ঘদিন যাবত ভোগ দখল করে আসছেন। ওই জায়গার একাংশে ঘর নির্মান করে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। স¤প্রতি একই গ্রামের মৃত মরতুজ আলীর ছেলে মোঃ আলমগীর ও মোহাম্মদ ওরফে মোঃ জালাল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে তফসিল বর্ণিত ভূমি জোর পূর্বক ভাবে দখল করে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি তারা তফসিল বর্ণিত ভূমি তাদের দাবি করে বিভিন্ন সময় তার বৃদ্ধ মা আছিয়া খাতুনকে হুমকি প্রদান করছে। এতে করে তার মা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন এবং শারিরীক ভাবে অসুস্থবোধ করছেন। বিষয়টি সুষ্টু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্তরা গ্রামের একটি অংশে বসবাস করে। উজ্জ্বলের বাড়ির পাশে তাদের একটি পুকুর রয়েছে। স¤প্রতি তারা পুকুর ভরাট করে বিক্রি করার চেষ্টা করছে। এতে পুকুরের যাওয়ার রাস্তা না থাকায় উল্লেখিতরা উজ্জ্বল মিয়ার ঘরে পিছনের অংশ ভেঙ্গে রাস্তা করার চেষ্টা করছে। এতে বাঁধা দিলে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। নাজমুল আলমসহ কয়েকজন টাকা দিয়ে আসামীদের সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কয়েকজন মুরুব্বীয়ান বলেন, ‘আমাদের জানামতে ওই দিকে পুকুরে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। কিছুদিন পূর্বে পুকুর ভরাট করে বিল্ডিং নির্মানের জন্য রাস্তা তৈরী করার চেষ্টা করছে আলমগীর ও তার লোকজন। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে।
তবে অভিযুক্ত আলমগীর মিয়া ওই দিকে পূর্ব থেকেই রাস্তা ছিল বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি প্রশাসন অবগত। আমরা জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করিনি’।
পুলিশ কর্মকর্তা উজ্জ্বল মিয়ার মা আছিয়া খাতুন বলেন, ‘পূর্ব পুরুষ থেকে ঘর নির্মান করে আমরা বসবাস করে আসছি। আমাদের ঘরের পিছনে কোন সময় রাস্তা ছিলনা। যা গ্রামের মুরুব্বীয়ান অবগত। কিছুদিন ধরে পুকুর ভরাট করে তারা আমার পিছন দিকে রাস্তা করার চেষ্টা করছে। আমার ছেলে চাকুরীর সুবাধে সুনামগঞ্জ থাকায় আমি বাড়িতে একা বসবাস করছি। এতে আসামীরা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছে। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে অবগত করেছি’। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাই।