জানা যায়, গত ২৫ জুন ছিল জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল। কাউন্সিলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের ৩টি পদে প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। এরা হলেন, এডভোকেট আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম, এডভোকেট সালেহ আহমেদ, মর্তুজা হাসান, এডভোকেট লুৎফুর রহমান তালুকদার, এডভোকেট আতাউর রহমান ও নুরুজ্জামান চৌধুরী। ১১টি সাংগঠনিক ইউনিটের ২৮১ জন কাউন্সিলারের মধ্যে ২৭৭ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট গণনায় এডভোকেট আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম ও এডভোকেট সালেহ আহমদ যথাক্রমে ১৮৩ ও ১৮০ ভোট  পেয়ে ১ম ও ২য় যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হলেও ৩য় পদটি নিয়ে দেখা দেয় বিভ্রান্তি। রাত ১২টায় সর্বশেষ ফলাফলে ঘোষণা করা হয় এডভোকেট লুৎফুর রহমান তালুকদার ১২৫ ভোট পেয়ে ৩য় যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু মাত্র ১ ঘন্টার ব্যবধানে পরাজিত প্রার্থী মর্তুজা হাসানের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনরায় ২য় দফা ভোট গণনার পর লুৎফুর রহমান তালুকদারকে পরাজিত দেখানো হয়। তখন মর্তুজা হাসানকে বিজয়ী ঘোষণা করে তার ভোট দেখানো হয় ১২৭।

তবে এ ফলাফল মেনে নিতে পারেননি এডভোকেট লুৎফুর রহমান তালুকদার। তিনি ৩য় দফা ভোট গণনার দাবি করে আবেদন করেন নির্বাচন কমিশনে। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার সকালে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় ৩য় দফা ভোট গণনা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর তত্ত¡াবধানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট আপিল উদ্দিন,  অনুপ কুমার দেব মনা ও মোঃ আলমগীর খান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল হক চৌধুরী, সহ সভাপতি শেখ সামছুল হক, নব নির্বাচিত ১ম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম, ২য় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সালেহ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মর্তুজ আলী, সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক শামীম আহমেদ ও যুগ্ম সম্পাদক পদে পরাজিত প্রার্থী এডভোকেট আতাউর রহমান প্রমূখ। ৩য় দফা ভোট গণনার পর দেখা যায়, মর্তুজা হাসান ও এডভোকেট লুৎফুর রহমান তালুকদার দু‘জনই পেয়েছেন ১২৬টি করে ভোট। দুই প্রার্থী সমপরিমাণ ভোট পাওয়ায় ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার শহীদ উদ্দিন চৌধুরী।

তবে সর্বশেষ খবরে জানা যায়, এ ফলাফল মেনে না নিয়ে চতুর্থ বারের মত আবারও ভোট গণনার দাবি করে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন মর্তুজা হাসান। এদিকে, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর খান জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার শহীদ উদ্দিন চৌধুরী নব নির্বাচিত জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে আলোচনা করে আজ শনিবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। এ অবস্থায় লটারীর মাধ্যমে বিজয়ী নির্বাচিত করা হতে পারে বলে একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বিগত ১৬ দিন জেলা আওয়ামীলীগের ৩য় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন-“মর্তুজা হাসান না এডভোকেট লুৎফুর রহমান তালুকদার”?

সচেতন মহল বলছেন সিদ্ধান্ত যা-ই হউক, মাত্র ২৭৭টি ভোট গণনায় পর পর ৩ বার  ডিগবাজির ঘোষণাটি নির্বাচন কমিশনের অদক্ষতারই পরিচয় বহন করে। অনেকে বলছেন, এটি খামখেয়ালীপনাও বটে। পাশাপাশি তাদের অদক্ষতায় পুরো কাউন্সিলকেই প্রশ্নবিদ্ধ করলেন নির্বাচন কমিশন।