ইংলিশ ফুটবলার হামজা চৌধুরী। তবে এবার তার পরিচয়টা হচ্ছে ভিন্ন। অভিষেক হতে যাচ্ছে দেশের হয়ে লাল সবুজের জার্সি গায়ে। আর এ উপলক্ষে আসছেন প্রিয় মাতৃভূমিতে। আজ সোমবার ১৭ মার্চ হামজা চৌধুরী সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে দেশে আসার পর গাড়িযোগে সরাসরি আসবেন বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে নিজ বাড়িতে। তার আগমনকে ঘিরে নিজ গ্রাম ¯œানঘাটসহ পুরো জেলাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
সাজ সাজ রব পড়েছে তার নিজ গ্রামে। হামজাকে অভিনন্দন বার্তা জানিয়ে ব্যানার, ফেস্টু ও তোড়নে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। নিজ এলাকার কৃতি সন্তানকে বরণ করতে প্রস্তুত গ্রামবাসি। এদিকে, হামজার আগমনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সব ধরণের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করছে বাফুফে। হামজার সাথে গ্রামের বাড়িতে আসছেন তার মা, ভাই, স্ত্রী ও ৩ সন্তান। বাবা দেওয়ান মুর্শেদ চৌধুরী চলে এসেছেন আগেই।
জানা গেছে- ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির তারকা হামজা চৌধুরী। যিনি একমাত্র বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াচ্ছেন হামজা। ছোট বেলা থেকেই দেশের প্রতি অন্যরকম টান ছিল হামজার। মা-বাবার সাথে দেশে এসেছেনও বেশ কয়েকবার। শান্ত ও ন¤্র স্বভাবের হামজার খোলোয়ারী জীবনে যেমন ছড়িয়েছেন খ্যাতি তেমনি গ্রামের সাধারণ মানুষদের কাছেও সে অত্যান্ত প্রিয়। তাই তো হামজাও দিচ্ছে তাদের আস্থার প্রতিদান। গ্রামের বাড়ি ¯œানঘাটে গড়ে তুলেছেন একটি হাফিজিয়া মাদরাসা। যেখানে পড়াশুণা করছেন এতিম শিশুরা।
পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে- প্রায় ১১ বছর পর দেশে আসছেন হামজা চৌধুরী। একদিন থাকবেন গ্রামের বাড়িতে। পরদিন ১৮ মার্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে তার। আর ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে খেলতে ২০ মার্চ দেশ ছাড়বেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হবে দেওয়ান হামজা চৌধুরীর। পরিবারের সদস্যরা জানান- খাবারের তালিকায় ভাত গরুর মাংস তার প্রিয় খাবার। সাথে দেশী সবজিও তার পছন্দের। হামজার খাবারের তালিকায় বেশ কয়েক ধরণের মাংস পরিবেশন করা হচ্ছে বলে জানান তারা। আর রাতে ঘুমাবেন তার পৈত্রিক ঘরেই।
এ বিষয়ে সফর আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন- আমাদের গ্রামের সন্তান দেশের জার্সি গায়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে এটা আমাদের জন্য গৌরবের। তার আগমনকে ঘিরে আমরা উছ¦সিত। বিশেষ করে তরুণরা তাকে একনজর দেখার জন্য বিশেষ আগ্রহে বসে আছে। তিনি বলেন- হামজা যখন ছোট থাকতে বাড়িতে আসত তখন আমি নিজেও তার সাথে ফুটবল খেলেছি। ফুটবলের প্রতি ছোট বেলায় থেকেই তার টান ছিল। আব্দুল আজিজ বলেন- হামজা আমাদের ছেলে। আমরা চাই সে দেশের হয়ে লাল সবুজের পতাকা বিশ্ব দরবারে উচিয়ে ধরুক। তিনি বলেন- হামজা আসার পর আমরা তাকে সংবর্ধনা দেয়ার আয়োজ করেছি।
হামজার বাবা দেওয়ান মুর্শেদ চৌধুরী বলেন- যদি হামজার মতো আরো খেলোয়ার দেশের হয়ে খেলতে আসে এবং ট্রেনিংসহ পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পায় তা হলে আগামী ২০৩০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের খেলার সম্ভাবনা থাকবে। তিনি বলেন- ভারতের বিপক্ষে খেলায় যেন দেশের হয়ে ভালো কিছু করতে পারে সে জন্য সবাই তার প্রতি দেয়ার রাখবেন।
বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান বলেন, “হামজা চৌধুরীর গ্রামের বাড়িতে আগমকে আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। যাতে তার নিরাপত্তায় কোন ঘাটতি না থাকে সে ভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বদা নিয়োজিত থাকবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।” তিনি আরো বলেন, এত কাছ থেকে তারকা ফুটবলারকে দেখতে পাবেন ভেবে আমার নিজের মাঝেও বাড়তি ভালো লাগা কাজ করছে।