মাধবপুর প্রতিনিধি ॥
মাধবপুরে অনুষ্ঠিত এক উত্তেজনাপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করলেন কয়েক হাজার দর্শক। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় মাধবপুর উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে আয়োজিত ফাইনাল খেলাকে ঘিরে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। খেলা শুরুর আগেই গ্যালারি পরিপূর্ণ হয়ে যায়। অতিরিক্ত দর্শকরা দাঁড়িয়ে মাঠের চারপাশ, সংলগ্ন সড়ক ও খোলা জায়গায় অবস্থান নিয়ে খেলা উপভোগ করেন। দীর্ঘদিন পর এমন প্রাণবন্ত ক্রীড়া আয়োজন স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনে নতুন উদ্দীপনা ফিরিয়ে এনেছে। ফাইনাল ম্যাচ আয়োজন করে মাধবপুর উপজেলা মোটরসাইকেল ফুটবল টুর্নামেন্ট কমিটি। এবারের ফাইনালে মুখোমুখি হয় মাধবপুরের বানেশ্বর একাদশ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর একাদশ। শুরু থেকেই আক্রমণপাল্টা আক্রমণে রোমাঞ্চ ছড়ায় দুই দল। নির্ধারিত ৯০ মিনিট গোলশূন্য থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে বানেশ্বর একাদশ বিজয় ছিনিয়ে নেয়।
খেলার প্রথমার্ধে বানেশ্বর একাদশ দুটি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি। শাহজাদাপুর একাদশও বেশ কিছু পাল্টা আক্রমণে উত্তেজনা ছড়ায়। দ্বিতীয়ার্ধেও সমান তালে লড়াই চলে দুই দলের মধ্যে। দ্রুতগতির খেলা, শর্ট পাস, লং বল ও নিখুঁত হেডট্যাকলের প্রদর্শনীতে মাঠজুড়ে করতালি উপচে পড়ে। ফাইনাল খেলায় সভাপতিত্ব করেন মাধবপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান। প্রধান অতিথি ছিলেন সায়হাম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ। তিনি বলেন, “মাধবপুরে ফুটবল সবসময় জনপ্রিয়। এমন আয়োজন তরুণদের প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি সামাজিক বন্ধনও সুদৃঢ় করে।” তিনি আরও জানান, হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সৈয়দ মো. ফয়সল। ধানের শীষ প্রতীকে তাকে বিজয়ী করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, “গ্রামাঞ্চলে তরুণদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ ধরে রাখতে নিয়মিত এমন আয়োজন অত্যন্ত জরুরি। খেলাধুলা যুব সমাজকে মাদক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখে।” তিনি আরও জানান, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং মাধবপুর সরাইলের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের প্রার্থীদের বিজয়ী করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান বলেন, “আমরা সবসময়ই তরুণদের উৎসাহিত করতে ক্রীড়া আয়োজনকে গুরুত্ব দিই। নিয়মিত টুর্নামেন্ট যুবসমাজকে সুস্থ বিনোদনে যুক্ত রাখে।” খেলা শেষে অতিথিরা বিজয়ী বানেশ্বর একাদশের হাতে ট্রফি, ক্রেস্ট ও পুরস্কার তুলে দেন। রানার্সআপ শাহজাদাপুর একাদশকেও স্মারক প্রদান করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান জুড়েও স্টেডিয়ামে করতালির ঢেউ ওঠে।
ফাইনালকে কেন্দ্র করে মাধবপুর ও সরাইল দু’উপজেলাতেই উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী দর্শক পরিবার পরিজন নিয়ে মাঠে উপস্থিত হন। স্টেডিয়াম এলাকায় চা-নাস্তার দোকান, ভ্রাম্যমাণ স্টল ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভিড়ে ছোটখাটো মেলার পরিবেশ তৈরি হয়, যা পুরো আয়োজনকে পরিণত করেছে এক উৎসবমুখর দিনে।