পুকুরের বর্তমান উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখে হতাশা প্রকাশ
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার ॥

 শহরের টাউন মডেল সংলগ্ন পুকুরটির এর বর্তমান অবস্থা পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ সংগঠকরা। গতকাল ২৬ নভেম্বর (বুধবার) বিকেলে পুকুরটির বর্তমান উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখে হতাশা ব্যক্ত করে তাঁরা বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশের চিন্তা করে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পুকুরটির উন্নয়ন কর্মকান্ড করা প্রয়োজন ছিল। তাঁরা বলেন, প্রায় দেড় দশক ধরে আরো কয়েকটি পুকুরের সঙ্গে এই পুকুরটিও দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছি। পুকুরটি দখলমুক্ত হওয়ার পর পরিবেশ, বন, জলবায়ু ও পানি উপদেষ্টা গতবছর ১৭ আগস্ট হবিগঞ্জ সফরকালে সরজমিনে পুকুরটি দেখেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন।  পরবর্তীতে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের অনুরোধে পরিবেশবাদী সংগঠন এর পক্ষ থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি সুব্রত দাস এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুকুরটির নকশা নিয়ে কাজ করেন। স্থপতি সুব্রত দাস সরজমিনে হবিগঞ্জ আসেন। এসময় সাবেক জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসক পুকুরের নকশার বিষয়ে স্থপতি সুব্রত দাস এর সঙ্গে কথা বলেন। কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী নকশা তৈরি করে দেন স্থপতি সুব্রত দাস।
পুকুরটিতে বর্তমানে যে নকশায় ছোট ছোট ছিদ্র রেখে তলদেশ থেকে চারপাড়ে পাকা দেয়াল দেওয়া হয়েছে, চারপাশে যে অতিরিক্ত জায়গা রাখা হয়েছে সেটি পুকুরের জন্য যথাযথ কার্যকর ও বিজ্ঞানসম্মত নয়। পুকুরের পানির সঙ্গে পাড়ের মাটির যে সম্পর্ক থাকে সেটি বাধাগ্রস্থ হবে এবং পুকুরটি প্রাকৃতিক পরিবেশ হারাবে।
তাঁরা বলেন, বর্তমান উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু হওয়ার পর আমরা সাবেক জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসক এর সঙ্গে দেখা করে আমাদের আশঙ্কার কথা জানাই। জেলা প্রশাসক আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রেখে পুকুরটিতে উন্নয়ন কর্মকান্ড করা হবে। এভাবে পুকুর পাড়ের চারপাশে পাকা দেয়াল দিয়ে সংরক্ষন করায় ইতিমধ্যেই হবিগঞ্জের একাধিক পুকুরের পানি নষ্ট হয়ে গেছে।
অনুরূপভাবে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের পুকুরটিতেও চারপাশে তলদেশ থেকে পাকা দেয়াল করা হয়েছে। পুকুরের পানির সঙ্গে পাড়ের মাটির যে সম্পর্ক থাকে সেটি অনুপস্থিত থাকলে পুকুরের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। একসময়ের পুকুরের শহর নামে পরিচিত হবিগঞ্জ শহরের অনেক পুকুর ইতিমধ্যেই হারিয়ে গেছে। বাকি যে পুকুর- জলাশয় গুলো রয়েছে সেগুলোকে যথার্থ প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরিয়ে এনে সংরক্ষনের দাবি জানান তাঁরা।
পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সংগঠক সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক মোঃ ইকরামুল ওয়াদুদ, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) হবিগঞ্জের আহবায়ক তাহমিনা বেগম গিনি, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, এডভোকেট বিজন বিহারী দাস, যাইদুর রহমান সৌরভ, আবু নাসের সামি, বুরহান তালুকদার রাহুল প্রমুখ।