শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে পার্কিং জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিকদের দখলে চলে গেছে, এ অভিযোগ স্থানীয় যাত্রী ও সাধারণ মানুষের। একসময় যাত্রীদের সুবিধা, নিরাপদ নেমে-চড়ার স্থান এবং যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে নির্মিত এই পার্কিংটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিকদের অনিয়ন্ত্রিত স্ট্যান্ড হিসেবে।
প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পার্কিংটির পুরো এলাকাজুড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। শ্রমিকরা এখান থেকেই যাত্রী ওঠানামা করান এবং নিয়মিত ভাড়ায় যানবাহন চালাচ্ছেন। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে; অনেক সময় ট্রেনের যাত্রীরা নেমে গোছানো পার্কিং বা সহজে পরিবহন পাওয়ার বদলে বিশৃঙ্খলার মুখোমুখি হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পার্কিংটি শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত সুযোগ-সুবিধা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য দুটোই বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক সময় যানবাহনের ভিড়ে সাধারণ মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, সৃষ্টি হয় যানজটও। এ ছাড়া একটি মহল ওই স্থান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা চাঁদা তুলে বন্টন করে নেয়। অনেক ভিআইপি যাত্রীদেরকে দেখা যায় পার্কিংয়ে প্রবেশ করতে না পেরে হেটে গিয়ে ট্রেনে উঠছেন।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এই পার্কিংটি মূলত জনস্বার্থে নির্মিত হলেও বর্তমানে মাঠপর্যায়ে সঠিক তদারকির অভাব রয়েছে। শ্রমিক নেতাদের প্রভাব ও স্থানীয় সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। তারা বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পার্কিংয়ের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি পরিবহন বিশৃঙ্খলা আরও প্রকট হবে।
এ বিষয়ে সচেতন মহল দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা মনে করেন, রেলওয়ে পার্কিংটি শ্রমিকদের অবৈধ দখলমুক্ত করে যাত্রীদের জন্য উপযোগী পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পারলে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশন আবারও আগের মতো গোছানো ও যাত্রীবান্ধব অবস্থানে ফিরবে।