স্টাফ রিপোর্টার ॥
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- যারা গণতন্ত্র নস্যাৎ করতে চায় তারা দেশের বন্ধু হতে পারে না। আমরা দেশকে ভালবাসি, দেশের মানুষকে ভালবাসি। আমরা প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, হবিগঞ্জে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করা আপনাদের দায়িত্ব। আপনাদের দুর্বলতার কারণে আওয়ামীলীগ এবং পালিয়ে যাওয়া আবু জাহিরের কালো টাকায় হবিগঞ্জে একটা গুলি অথবা ককটেল ফুটালে আবারও হবিগঞ্জের রাজপথে তৌহিদী জনতা গর্জে উঠবে।
তিনি গতকাল শনিবার বিকালে হবিগঞ্জ পৌরসভা মাঠে জেলা বিএনপির প্রতিবাদ মিছিলের প্রাক্কালে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মূখ্য সমন্বয়ক ওসমান হাদী এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের উপর হামলায় জড়িত দুস্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি এই প্রতিবাদ মিছিল করে। মিছিলটি পৌরসভা মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে হবিগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ্য করে জি কে গউছ বলেন- জনগণের টাকা চুরি করে পালিয়ে যাওয়া আবু জাহির তার ফেসবুক আইডি থেকে হবিগঞ্জে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে উস্কানি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য এখনও আমরা পাচ্ছি না। যদি এগুলো বন্ধ না হয় তাহলে আপনারা এর দায় এড়াতে পারবেন না। মনে রাখবেন, ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা এবং তার প্রশাসনকে এক সাথে আমরা মোকাবেলা করেছি।
তিনি বলেন- হবিগঞ্জে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, আবু জাহির লীগ, সেলিম লীগ, মোতাচ্ছির লীগ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার উপর গুলি করেছে। কিন্তু একটি আগ্নেয়াস্ত্র এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি। এগুলোই হচ্ছে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার মুল কারণ।
জি কে গউছ বলেন- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদশের বিভিন্ন থানা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে। আওয়ামীলীগ নামে বেনামে তাদের দলীয় লোকজনকে অস্ত্র দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার গত ১৫ মাসে আমরা দেখি নাই এসব অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তারাই এসব আগ্নেয়াস্ত্র¿ ব্যবহারের মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনকারী প্রার্থীদের ভয় দেখাচ্ছে, গুলি করছে, ভোটারদের ভয় দেখিয়ে নির্বাচন থেকে দুরে রাখার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছে, বাংলাদেশের মানুষ দেশের প্রয়োজনে, গণতন্ত্রের প্রয়োজনে বারবার গর্জে উঠেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পরও লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, আমরা নির্বাচনী পরিবেশ সুন্দর দেখতে চাই। কোনো দুস্কৃতিকারী যাতে বাহিরে থাকতে না পারে। আইন শৃংখলা বাহিনীকে তার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা দেখতে চাই আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা আইনের আওতায় এসেছে।
তিনি বলেন- অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের পূর্ব শর্ত হচ্ছে নিরপেক্ষ প্রশাসন। গত ৩টি নির্বাচনে আমরা দেখেছি রিটার্নিং অফিসারা কতটা নির্লজ্জের মত অন্যায়ের কাছে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন। গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের রক্তের দাবী বাংলাদেশে অবাধ নিরপক্ষে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। বাংলাদেশের মানুষ ভোট সেন্টারে যেতে চায়, নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। যারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্রের লেবাসে যাদের সুবিধাবাদি চরিত্র তাদের বিষয়েও আমাদের চোখ কান খোলা রাখতে হবে। বিএনপি জনগণের পক্ষে ছিল, বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়েই যে কোনো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী এনামুল হক, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী বেলাল, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান কাজল, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এস এম বজলুর রহমান, জেলা যুবদলের আহবায়ক জালাল আহমেদ, সদস্য সচিব সফিকুর রহমান সিতু, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক মফিজুর রহমান বাচ্চু, জেলা জাসাসের আহবায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক ইমরান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট ফাতেমা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা লাভলী সুলতানা, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহবুব প্রমুখ।