দেশপ্রেমিক নক্ষত্র খালেদা জিয়ার বিদায়
তারিখ: ৩১-ডিসেম্বর-২০২৫
আখলাছ আহমেদ প্রিয় ॥

 বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আর নেই (ইন্না...রাজিউন)। গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুরো দেশকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মৃত্যুকালে দেশের জনপ্রিয় এই নেত্রীর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী। দেশ-বিদেশে তথা দক্ষিণ এশিয়ায় নারী প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয় এ নেত্রী আজ দেশবাসী, দলীয় নেতাকর্মী, ভক্ত ও অনুসারীদের কাঁদিয়ে পরলোকে পাড়ি জমান। শেষ সময়ে খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন ১৭ বছর নির্বাসনের পর দেশে ফেরা বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান, নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান ও ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমানসহ পরিবারের সদস্য, দলীয় নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সারা দেশে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জ জেলাজুড়েও বইছে শোকের স্তব্ধতা। দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষ খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগঘন পোষ্ট করেছেন অনেকেই। শহরের শায়েস্তানগরস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩ বারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। একই সাথে নেত্রীকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দানের জন্য মোনাজাত কনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে, আজ দুুপুর ১ টা থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের দোকানপাঠ বন্ধ ঘোষনা করেছে হবিগঞ্জ মার্চেন্ট এসোসিয়েশন। এ বিষয়ে গতকাল রাত ১০ টায় শহরের মাইকিং করে দোকান পাঠ বন্ধ রাখার জন্য ব্যবসায়িদের জানানো হয়। এদিকে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজ বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। এ ছাড়া আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সারাদেশে সাধারণ ছুটি থাকবে। এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বর এবং ১ ও ২ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার (খালেদা জিয়া) দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা হবে। সংসদ ভবন প্লাজায় তার জানাজা হবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারের (জিয়া উদ্যানে) ওখানেই তাকে দাফন করা হবে। এর আগে গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন। আজ বুধবার সারাদেশে সাধারণ ছুটি থাকবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।