শহরের প্রধান সড়ক ২ ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ, যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ
তারিখ: ৯-জুন-২০২৩
জাকারিয়া চৌধুরী \

তীব্র লোডশেডিং আর হবিগঞ্জ শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে গাছ কাটার প্রতিবাদে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে প্রায় ২ ঘন্টা প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক লোকজন অংশ গ্রহন করেন।
জানা যায়, গত কয়েকদিন যাবত হবিগঞ্জ শহরে বিদ্যুতের লোডশেডিং তীব্র আকার ধারণ করেছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৩ থেকে ১৪ ঘন্টাই থাকছে না বিদ্যুৎ। যে কারণে তীব্র গরমে হাপিয়ে উঠছে সাধারণ লোকজন। স্থাবির হয়ে পড়েছে শহরের ব্যবসা বানিজ্য। এছাড়াও হবিগঞ্জ শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছ। এরই প্রেক্ষিতে দুপুরে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে একদল শিক্ষার্থীরা শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এসময় সড়কের দু’পাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে। আর এতে করে সীমাহীন দূর্ভোগে পোহাতে হয় যাত্রীদের।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান ও হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে দ্রæত সংকট সমাধানের আশ^াস দিলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। এর পুর্বে একই স্থানে দাড়িয়ে একই দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাপা হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জুল সোহেল, নারী নেত্রী মাহমুদা খা, নাদিয়া খা, প্রণব কুমার প্রমুখ।
বাপা হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জুল সোহেল বলেন, আমরা এখানে গাছ রক্ষার জন্য কথা বলছি। আমরা হবিগঞ্জের বিদ্যুতের দুরাবস্থার কথা বলছি। আমরা গাছের জন্য হবিগঞ্জে বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি না। এরপরও গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। গাছ যেন কাটা না হয় সেজন্য আইন রয়েছে। কিন্তু আইন প্রয়োগের ব্যাপারে তারা অবিবেচক হয়ে গাছগুলো কেটে ফেলছে। হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে গাছগুলো না কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ছোট গাছগুলোর আড়ালে শতবর্ষ পুরনো গাছগুলোও কাটা হচ্ছে।
আন্দোলনরত মাহমুদা খা বলেন, হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের পাইকপাড়া থেকে পুরাণ বাজার পর্যন্ত সামাজিক বনায়নের দোহাই দিয়ে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। বর্তমানে যে তাপদাহের সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য গাছ রোপন করার পাশাপাশি বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে। গাছ কাটার পাশাপাশি অসহ্য বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে হবিগঞ্জবাসীর খুবই কষ্ট হচ্ছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রণব কুমার দেব বলেন, আমরা ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ রোড়ে নির্বিচারে গাছ কাটার প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় সড়ক অবরোধ করছি। গাছ কাটা মানুষ হত্যার মতো। গাছ না থাকলে মানুষ বাঁচবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে আমাদের জানিয়েছে রাস্তা উন্নয়নের জন্য এই গাছ কাটা হচ্ছে। কিন্তু গাছ কেটে কোনো উন্নয়ন হয় না। শুধু কিছু লোকের পকেট ভারী হবে।