জয়নগর হাজী আমির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভাংচুর, মালামাল লুট
তারিখ: ১০-সেপ্টেম্বর-২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার \

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের হাজী আমির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভাংচুর ও মালামাল লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। দুবৃর্ত্তরা বিদ্যালয়টিতে হামলা চালিয়ে কম্পিউটারসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। 
সূত্র জানায়, লুকড়া ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রাম জয়নগরে ২০১০ সালের দিকে হাজী আমির আলী উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাতা হওয়ায় পর এলাকায় শিক্ষার হার অনেকেটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করছেন। ভালো ফলাফল অর্জন করায় বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়। ওই ল্যাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কম্পিটার প্রশিক্ষণসহ এর উপর জ্ঞান অর্জন করছেন। কিন্তু গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে ২ জন সংবাদিক বিদ্যালয়ের যান। সেখানে গিয়ে একটি বিশেষ বাহিনী তাদেরকে পাঠিয়েছেন বলে স্কুলের শিক্ষকদের জানান। ওই দুই সাংবাদিকদের সাথে এলাকার কিছু দৃস্কৃতিকারীরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে দৃস্কৃতিকারী তাদেরকে সামনে রেখেই বিদ্যালয়ে হামলা চালায় এবং শিক্ষকদের জোর পূর্বক স্কুল থেকে বের করে দেয়। এ সময় তারা বিদ্যালয়ের নেইম প্লেটসহ বিভিন্ন আসবাব ভাংচুর করে এবং ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাবকে ১৭টি ল্যাপটপসহ স্কুলের সকল প্রমানপত্র নিয়ে যায়। এতে বিদ্যালয়ের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দুবৃর্ত্তরা। 
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মোছাঃ রেজোয়ানা আক্তার জানান, বিদ্যালয় চলাকালীন ১১ টার সময় দুই জন লোক এসে আমাকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে স্কুলে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা আমার কাছে নির্মাধীন নতুন ভবনের চলমান কাজের তথ্য জানতে চান। এ সময় শিক্ষিকা জানান, ভবন নির্মাণ তথ্য আমরা দিতে পারবো না। এ জন্য জানতে চাইলে আপনারা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করেন। এ সময় সাংবাদিকদের সাথে এলাকার কিছু লোকজন বিদ্যালয়ে ডুকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এবং আমিসহ আমার সহকর্মীদের জোর পূর্বক বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। এরপর তারা কম্পিউটার ল্যাবে ডুকে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, প্রিন্টার, স্ক্রেনারসহ এর যাবতীয় মামলা ও অফিস থেকে বিদ্যালয়ের দলীলপত্র নিয়ে যায়। এ বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে সদর মডেল থানার এসআই ওয়াহেদ গাজীসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। 
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই ওয়াহেদ গাজী জানান, এলাকার কিছু লোকজন বিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে ১৭টি  ল্যাপটপসহ এর যাবতীয় মালামাল নিয়ে গেছে। অভিযোগ দায়ের করলে এ ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, আমরা খবর পেয়েছি, এলাকার কিছু লোকজন বিদ্যালয়ের ডিজিটাল ল্যাব থেকে ১৭টি কম্পিউটারসহ এর যাবতীয় মালামাল নিয়ে গেছে এবং তারা জোর পূর্বক বিদ্যালয়ের দপ্তরীর কাছ থেকে চাবি নিয়ে শিক্ষক ও ছাত্রদের বের করে ক্লাস রুমগুলোতে তালাবদ্ধ করেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউএনওকে আমরা বিষয়টি অবগত করেছি। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রঞ্জন চন্দ্র দে জানান, এঘটনাটি আমাকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবগত করেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হবিগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে অবগত করেছি।

প্রথম পাতা