আওয়ামীলীগ এতটা বেপরোয়া ছিল তারা শেষ বিচারের কথা ভুলে গিয়েছিল
তারিখ: ১৮-নভেম্বর-২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার ॥

 হবিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- বাংলাদেশে যখনই নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে, মানুষ ভোট সেন্টারে গিয়েছে, বাঁধাহীনভাবে ভোট দিতে দিতে পারছে, সেই ভোট সঠিকভাবে গণণা হয়েছে, তখনই বিএনপি নির্বাচিত হয়েছে। জনগণের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপি আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে। দেশে-বিদেশে চক্রান্ত করে অতিতে কেউ বিএনপিকে রুখতে পারেনি, আগামী ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনেও বিএনপিকে কেউ রুখতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
তিনি গতকাল সোমবার বিকালে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৬নং রাজিউড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 
সভায় জি কে গউছ আরও বলেন- একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমরা জন্ম গ্রহন করেছি। এই দেশে আমরা বড় হয়েছি, এই দেশে আমরা বসবাস করছি। দেশের সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিক মাথা উচু করে সমান মর্যাদা নিয়ে বসবাস করার কথা ছিল। এই স্বাধীন দেশে পরাধীন হয়ে আমাদের থাকার কথা ছিল না। কিন্তু আওয়ামীলীগ ভিন্ন মত, ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন পথের মানুষকে কৌশলে পরাধীন করে রাখার চেষ্টা করেছে। আওয়ামীলীগ গত ১৭টি বছর আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আওয়ামীলীগের ভয়ে মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ভুলে গিয়েছিল। যারা প্রতিবাদ করেছে তাদের উপর নেমে এসেছে অত্যাচারের স্টিম রোলার। আওয়ামীলীগ এতটা বেপরোয়া ছিল, তারা পরকালে শেষ বিচারের কথা ভুলে গিয়েছিল। তারা ভেবেছিল কেয়ামত পযন্ত ক্ষমতায় থেকে মানুষকে শোষণ করবে, অত্যাচার করবে। আওয়ামীলীগের এই ইচ্ছা মহান আল্লাহ পুরণ করেননি। কারণ আল্লাহ সীমালঙ্গণকারীকে পছন্দ করেন না। মানুষের জীবন যেখানে ক্ষণস্থায়ী ক্ষমতা সেখানে চিরস্থায়ী হতে পারে না।
তিনি বলেন- আমরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি করি। আমরা মানুষকে সম্মান করতে জানি, আমরা মানুষকে ভালবাসি, আমরা মানুষের জন্যই রাজনীতি করি। আমরা বাড়াবাড়ি করি না, কারো দুর্বলতাকে পুজি করে রাজনীতি করি না। আমরা ভাল কর্মের মাধ্যমে আল্লাহকে রাজি খুশি করার চেষ্টা করি, তাহলেই ইহকাল যেমন ভাল হবে পরকালও ভাল হবে।
জি কে গউছ বলেন- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় ইর্শান্নিত হয়ে, খালেদা জিয়ার চরিত্রে কালিমা লেপন করতে শেখ হাসিনা মাত্র ২ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি কাল্পনিক মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের আমলে এই মিথ্যা মামলা থেকে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা আপনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ দন্ড আপনার কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছে। এটা আপনার পাওনা ছিল। মানুষকে বেইজ্জত করবেন, আর আল্লাহ আপনাকে ছেড়ে দিবেন, এটা কিভাবে বিশ্বাস করলেন, আল্লাহ তো নমরূদ ফেরাউনকেও ছাড়েননি।
তিনি বলেন- বিচার শুরু হয়েছে, আওয়ামীলীগ হাজার হাজার টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে, এই টাকা ফিরত আনা হবে। জনগণের টাকা চুরি করে যারা বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করছেন আপনাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি করা হবে।  
জি কে গউছ বলেন- রাজনীতি হবে মানুষের জন্য। আমরা রাস্তা নির্মাণ করব, ব্রীজ কালভার্ট নির্মাণ করব, রাষ্ট্রের টাকা নিজেরা চুরি করব না, অন্য কাউকে চুরি করতে দিব না। আমাদেরকে আওয়ামীলীগের পরিণতি থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
বিশিষ্ট মুরুব্বি আকরাম আলীর সভাপতিত্বে এবং ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহবুদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দুলাল, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ আলমগীর, সহ সভাপতি ওয়াহিদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক শাআলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সহিদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাজী এনামুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান কাজল, সাধারণ সম্পাদক সামসুল ইসলাম মতিন, জেলা বিএনপি নেতা মহিবুল ইসলাম শাহিন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব সফিকুর রহমান সিতু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন, এডভোকেট মতিউর রহমান সানু, রাজিউড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাফেজ উসমান গনি, নিজামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজনু তালুকদার, ইয়াকুব উল্লা, মাওলানা আব্দুস সামাদ আজাদ, আকলাছ মিয়া, হাজী তোরাব আলী, মাওলানা আশরাফ আলী, মহিলা মেম্বার রুজিনা বেগম, সুমন মোল্লা, আহমদ আলী, রুবেল মিয়া প্রমুখ।

প্রথম পাতা