শায়েস্তাগঞ্জে সরকারী জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করেছে পিতা-পুত্র
তারিখ: ১২-ডিসেম্বর-২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার ॥

 আদালতের স্বত্ত্ব মামলা থাকা সত্ত্বেও শায়েস্তাগঞ্জে জোরপূর্বক জায়গা দখল করে রেখেছে ভূমি খেকো পিতা-পুত্র। এমনকি সরকারী কর্মকর্তাকে ভুল বুঝিয়ে নামজারীও করেছিল। এক ভূক্তভোগীর আবেদনের প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের শুনানী শেষে নামজারি বাতিলের আদেশ হয়েছে। ফলে তফসীল বর্ণিত ভূমি ‘ক’ তালিকা হতে বাদ পড়ায় ১/১নং খতিয়ানে গেজেটভুক্ত হয়। তবুও ভূমি খেকো পিতা-পুত্র দখল ছাড়েননি না। এ ব্যপারে ভূমি জবরদখলকারীদের নিকট হতে উদ্ধার করার নিমিত্তে উচ্ছেদ কার্যক্রম গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার দাউদনগর এলাকার মৃত জ্যোতিষ পাল এর পুত্র সুজিত পাল। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। 
জানা যায় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার চুরনুর আহাম্মদ মৌজার জেএলনং-১৫৭, এসএ খতিয়ান ৫০৮, এসএ দাগ-৯৬৬, আরএস দাগ ১২২২, মোট মোয়াজি ০২৮৯ দুই শতক উনাননব্বই অযুতাংশ ভূমি ওই এলাকার মৃত নিকুঞ্জ পাল এর পুত্র নিরঞ্জন পাল এবং তার ছেলে সুদীপ্ত পাল (শাওন) আদালতে স্বত্ত্ব মামলা থাকা সত্ত্বেও (মামলা নং-১২৯/২০১৪) জোরপূর্বকভাবে উক্ত জায়গা দখল দোকান নির্মাণ করে রেখেছেন। উক্ত দোকান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছেন। ইতোপূর্বে ভূক্তভোগী সুজিত পাল আইনানুগ প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরজমিনে সত্যতা পেয়ে গৃহটি তালাবদ্ধ করে দেন। পরবর্তীতে নিরঞ্জন পাল জোরপূর্বক দোকানে প্রবেশ করে পুনরায় দখল করে ব্যবসা শুরু করার পায়তারা করলে ভুক্তভোগী সুজিত পাল ২০/০১/২০২২ইং তারিখে পুনরায় আরেকটি আবেদন করেন। 
পরবর্তীতে গত ৩০/১/২০২৫ইং তারিখে সুদীপ্ত পাল এলাকার আঃ রশিদের পুত্র মোঃ ফেরদৌস মিয়া এবং বিরামচর গ্রামের সেলিম মিয়াকে নিয়ে দোকান ঘরের কাজ করেন। গত ৪/১২/২০২৫ইং তারিখে নিরঞ্জন পাল ও সুদীপ্ত পালের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক রাতে আধারে পুনরায় সরকারি জায়গায় কাজ শুরু করেন। এদিকে সরকারী জায়গা হওয়াতে পৌরসভা থেকে কোন ধরণের দোকান নির্মাণেরও অনুমতি আনতে পারেনি।
এর প্রেক্ষিতে গত ২৪/২/২০২৫ইং তারিখে সুজিত পাল জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন দাখিল করেন। আবেদনটি শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলেও পরে তা পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে সুজিত পাল গত ৮/৪/২০২৫ইং তারিখে পুনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদনটি পৌছে দেন। 
উল্লেখিত বিষয়টি বিবেচনা পূর্বক ভূমি খেকো নিরঞ্জন পাল ও তার পুত্র সুদীপ্ত পালের কবল থেকে জবরদখলকৃত জায়গা উদ্ধারপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগী।
উল্লেখ্য, নিরঞ্জন পাল ও তার পুত্র সুদীপ্ত পাল বিভিন্ন সময়ে সুজিত পালকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাকে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে বলে প্রকাশ্যে লোকমুখে বয়ে বেড়াচ্ছে।
এছাড়াও নিরঞ্জন পালের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। অশি^নী কুমার পাল চৌধুরী স্বাধীনতার পর ভারতে চলে যান। তার সম্পত্তির ৯৬৮, ৯৬৯, ৯৭০, ৯৬৭, ৯৬৬ ও ৯৮০ দাগের প্রায় ৬৬ শতাংশ জায়গায় শায়েস্তাগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে, এরমধ্যে নিরঞ্জন পাল একটি দাগের জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ করে দখল রেখেছেন। সে অত্যান্ত প্রভাবশালী হওয়ায় ও শায়েস্তাগঞ্জে তার ব্যাপক দাপট থাকায় কেউ ভয়ে মুখ খোলে কথা বলার সাহস পায় না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।