স্টাফ রিপোর্টার ॥
হবিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- আওয়ামীলীগ এককভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য বিনাভোটে এমপি বানিয়েছিল। দিনের ভোট আগের রাতে নিয়েছে, আমি ডামি পাতানো নির্বাচন করেছে। এতে ভোটার চিনে না এমপিকে, এমপি চিনে না ভোটারকে। আওয়ামীলীগ গত ১৭টি বছর দেশের মানুষকে কষ্ট দিয়েছে, মিথ্যা কথা বলে মানুষের চরিত্র হনন করেছে, ভিন্ন মত ও ভিন্ন দলের মানুষকে অপমান অপদস্ত করেছে। কিন্তু এলাকায় কোনো উন্নয়ন করেনি, আওয়ামীলীগ নেতারা উন্নয়নের নামে নিজেদের আখের গুছিয়েছে।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৬নং রাজিউড়া ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভার শুরুতেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সভায় জি কে গউছ আরও বলেন- মানুষ যখনই ব্যালট পেপার হাতে পায়, তখনই বিএনপি মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যায়। এবার মহান আল্লাহ আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছেন। বিএনপির প্রতিটি সভা-সমাবেশে তরুণদের মিছিলে সয়লাভ হচ্ছে। গত ১৭ বছর এই তরুণরা উপেক্ষিত হয়েছে, তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, আওয়ামীলীগ না করার কারণে কোনো তরুণ তরুণী চাকুরী পায় নাই। ভিন্ন মত পোষণকারী তরুণ তরুনীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে আওয়ামীলীগ মাসের পর মাস জেলে আটক রেখে নির্যাতন করেছে। বিএনপির রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে প্রথম দেড় বছরে সকল দল ধর্মের উর্ধ্বে উঠে ১ কোটি তরুণ তরুণীর চাকুরীর ব্যবস্থা করা হবে। দেশের কৃষকদের কৃষি কার্ড দেয়া হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে একজন কৃষক রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। পরিবারের মায়েদের নামে ফ্যামিলী কার্ড চালু করা হবে। মানুষের প্রত্যাশা পুরণে এক নতুন বিএনপি দেশে হাজির হবে। এটা কথায় নয়, কাজ দিয়ে আমরা প্রমাণ করব।
তিনি বলেন- গত ১৭টি বছর আমরা যখনই উন্নয়নের কথা বলেছি, মানুষের অধিকারের কথা বলেছি, কৃষকের জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর কথা বলেছি, ন্যায্যমূল্যে সার দেয়ার কথা বলেছি, কৃষকের উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার কথা বলেছি, তখনই আমাদের উপর শেখ হাসিনার দমণ পীড়ন শুরু হয়ে যেতো। আওয়ামীলীগ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে, আমাদেরকে ঘর ছাড়া বাড়ি ছাড়া করেছে, আওয়ামীলীগ ভেবেছিল এসব কাজ করে সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু আওয়ামীলীগের শেষ রক্ষা হয়নি। যেমন কর্ম তেমন ফল, আওয়ামীলীগ আজ দেশ ছাড়া, বাড়ি ছাড়া। তিনি বলেন- আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র কোন দিকে যাবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা থাকবে কি থাকবে না, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে কি থাকবে না, সেটা আমাদের ভোটের মাধ্যমেই ফায়সালা হবে। তাই সকলকে ভোট সেন্টারে যেতে হবে। আমার ভোট আমি দব, যাকে খুশি তাকে দিব।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জি কে গউছ বলেন- বিএনপির বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর সকল ব্যানার ফেস্টুন নিজ দায়িত্বে নামিয়ে ফেলতে হবে। আমাদেরকে নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলতে হবে। নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে আইন শৃংখলা বাহিনীকে সহযোগীতা করতে হবে।
বিশিষ্ট মুরুব্বি সাস্তু মেম্বারের সভাপতিত্বে এবং নজরুল ইসলাম, আবদুল বাছিত, সামছুল ইসলাম, সৈয়দ মিয়া, শাহিন, হারুন মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাজী এনামুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান কাজল, সাধারণ সম্পাদক সামছুল ইসলাম মতিন, সহ সভাপতি আজম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস মানিক, রাজিউড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাফেজ উসমান, সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল মিয়া, সবুর আলী, ইদ্রিছ মিয়া, মোঃ নজরুল ইসলাম, শামসুল ইসলাম রানা, আব্দুল করিম, মোঃ কাজল মিয়া, ইসমাইল, আব্দুল বাসির, মোঃ হারুন মিয়া, আব্দুল হান্নান, টেনু বিশ্বাস, সবুর আলী, ইদ্রিস মিয়া, টেনু বিশ্বাস, জহির মিয়া, জিতু মিয়া, ইসমাইল মিয়া, হিরা মিয়া, হিরেন্দ ঠাকুর প্রমুখ।