বাংলাদেশের পাঠানো ধনিয়ার বীজ মহাকাশ ঘুরে ৬ মাস পরে বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে এসেছে। বীজগুলো দীর্ঘ ছয় মাস আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন জাপানের ‘কিবো মডিউলে’ থাকার পর দেশে ফিরে আসে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় আশুলিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি) অডিটোরিয়ামে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এশিয়ান হার্বস ইন স্পেস শীর্ষক মহাকাশ জীববিজ্ঞান গবেষণা প্রকল্পের আওতায় ‘স্পেস ট্রাভেলড করিয়েন্ডার (ধনিয়া) সিড’ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। তিনি মহাকাশ থেকে পাঠানো ধনিয়া বীজ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন। গবেষকরা জানান, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের গবেষক এবং শিক্ষার্থীদের মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ও গবেষণার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ‘এশিয়ান হার্বস ইন স্পেস’ শীর্ষক গবেষণা কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি) ২০২১ সাল থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যার ফলে ধনিয়া বীজ ইতোমধ্যে নাসার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ‘জাপানের কিবো মডিউলে’ ছয় মাস অবস্থান শেষে বাংলাদেশে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং জাপানি মহাকাশ গবেষণা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পরিচালিত ‘এশিয়ান হার্বস ইন স্পেস’ প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ থেকে ধনিয়া বীজ মহাকাশে পাঠানো হয়। মহাকাশে পাঠানোর সময় একই ধনিয়া বীজের কন্ট্রোল নমুনা সংরক্ষণ করা হয় এনআইবির গবেষণাগারে। মহাকাশ থেকে ঘুরে আসা ধনিয়া বীজের সঙ্গে কন্ট্রোল ধনিয়া বীজের তুলনামূলক সব বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত থেকে বুঝা যাবে এসব বীজে কোনো ধরনের ফিজিওলজিক্যাল এবং মলিকুলার পরিবর্তন হবে কিনা? এসব তথ্য পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব, বিস্তার এবং ভবিষ্যতে মহাকাশেও ফসল ফলানোর সম্ভাবনার পাশাপাশি না জানা অনেক প্রশ্নের উত্তর এনে দিতে পারে। গবেষকরা জানান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের অনুমোদন, দিকনির্দেশনা এবং অপরিসীম উৎসাহ সম্ভব করেছে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিসরে মহাকাশ জীববিজ্ঞান গবেষণায় যুক্ত করতে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) এর স্পেস সিস্টেম ল্যাবরেটরির প্রকৌশলী মিজানুল হক চৌধুরীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ কার্যক্রম আলোর মুখ দেখে। মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত এই গবেষণায় স্কুল-কলেজের নবীন শিক্ষার্থীদেরও যুক্ত করা হবে। এ গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী এবং গবেষকগণ ভবিষ্যতে মহাকাশ জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত গবেষণায় প্রভূত অবদান রাখতে পারবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহ, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কেশব চন্দ্র দাস এবং ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোছা. মুসলিমা খাতুন প্রমুখ।