হবিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- আওয়ামীলীগ লুটপাট করে দেশের অর্থনীতি ফোকলা করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের অর্থ চুরি করে ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা এবং তার এমপি মন্ত্রীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামীলীগ দুষ্টামি করেছে, কিন্তু আমরা দুষ্টামি করি নাই। এর মানে এই নয়, অন্যায় যারা করেছে, যারা অন্যের সম্পদ লুট করেছে, যাদের দ্বারা এলাকার শান্তি বিনষ্ট হয়েছে, আজ হোক কাল হোক দেশের প্রচালিত আইন অনুযায়ী তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি গতকাল সোমবার বিকালে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ১নং লোকড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভার শুরুতেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। 
সভায় জি কে গউছ বলেন- বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদ জিয়া এই দেশের মানুষের কল্যাণে জীবনের বড় একটি অংশ ব্যয় করেছেন। মানুষের দাবী আদায়ের জন্য, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একাধিকবার খালেদা জিয়া কারাভোগ করেছেন। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি, তিনি মানুষকে নিয়েই সামনে এগিয়ে গেছেন। সেই খালেদা জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন হবে তখন খালেদা জিয়াকে দেশে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য তিনি নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে লন্ডনে দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসা না করে দেশে চলে এসেছিলেন। 
তিনি বলেন- খালেদা জিয়া নিজের জীবনবাজি রেখে এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার কবল থেকে গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য বারবার মামলার মুখোমুখি হয়েছেন, জেল কেটেছেন, কিন্তু দেশের মানুষকে ছেড়ে তিনি পালিয়ে যাননি। খালেদা জিয়া মানুষকে ভালবেসেছেন, প্রতিদানও পাচ্ছেন। বাংলাদেশের এমন কোনো জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, গ্রাম নেই যেখানে খালেদা জিয়ার জন্য চোখের পানি ফেলে মানুষ দোয়া প্রার্থনা করছে না।   
জি কে গউছ বলেন- দেশের প্রয়োজনে, গণতন্ত্রের প্রয়োজনে, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, সম্প্রীতির স্বার্থে খালেদা জিয়ার খুব প্রয়োজন। মহান আল্লাহ যদি মানুষের দোয়ায় খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে দেন, তাহলে খালেদা জিয়ার ৩ বারের দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন- আওয়ামীলীগের আমলে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। কেউ কেউ কারাবরণ করেছে, অনেকই অপমানিত হয়েছে, কেউ কেউ অন্যের কথা দ্বারা বেইজ্জত হয়েছে। কিন্তু সহ্য করা ছাড়া আর কিছু করার ব্যবস্থা ছিল না। আমরা সহ্য করেছি, ধর্য্য ধরেছি এবং মহান আল্লাহর কাছে মজলুম হিসেবে জালেমদের বিরুদ্ধে মনের আকুতি পেশ করেছি। আওয়ামীলীগ এতটা বেপরোয়া ছিল, তারা মানুষকে মানুষ মনে করেনি। আওয়ামীলীগ মানুষকে সম্মান করতে জানত না। আওয়ামীলীগ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল।
জি কে গউছ বলেন- বিএনপি মানুষকে ভালবাসে, যখনই দেশের মানুষের বিপদ এসেছে বিএনপি বুক পেতে মানুষের সামনে দাঁড়িয়েছে। মানুষও তার প্রতিদান দিয়েছে, যখনই বিএনপির উপর কোনো বিপদ এসেছে বাংলাদেশের মানুষ বুক পেতে বিএনপিকে রক্ষা করেছে। বিএনপির রাজনীতিই হচ্ছে মানুষকে নিয়ে। দেশ ও জাতির কল্যানেই বিএনপি রাজনীতি করে।
বিশিষ্ট মুরব্বি হাজী আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে ও ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এনামুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাজী এনামুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান কাজল, সাধারণ সম্পাদক সামছুল ইসলাম মতিন, সহ সভাপতি আজম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস মানিক, জেলা যুবদলের আহবায়ক জালাল আহমেদ, সদস্য সচিব সফিকুর রহমান সিতু, লোকড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ইলিয়াছ আহমেদ, কাউছার আহমেদ, আব্দুর রউফ, বিশিষ্ট মুরব্বি ইদ্রিস মিয়া, ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাহুল মিয়া, জাবেদ আলী, রোয়াব আলী, রেনু মিয়া, তানিম উল্লা, মাওলানা মনির হোসেন প্রমুখ। সভার শুরুতেই দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ আবু ইউসুফ।