মাধবপুর প্রতিনিধি ॥
শখের বশে টমেটো চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন মাধবপুর উপজেলার শাহজালালপুর গ্রামের সংবাদকর্মী হামিদুর রহমান। পেশায় একজন পেশাদার সংবাদকর্মী হলেও কৃষির প্রতি আগ্রহ থেকে চলতি মৌসুমে তিনি ৪০ শতক জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের টমেটো চাষ করেন। সঠিক পরিকল্পনা, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুসরণ করায় অল্প সময়েই তার এই উদ্যোগ এলাকায় দৃষ্টি কেড়েছে। চলতি মৌসুমে টমেটো চাষে হামিদুর রহমানের মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। কার্তিক মাসের শেষ দিকে তিনি মালচিং পদ্ধতিতে সারিবদ্ধভাবে টমেটোর চারা রোপণ করেন। জমি প্রস্তুত, চারা রোপণ, সেচ, সার প্রয়োগ ও রোগবালাই দমনসব ক্ষেত্রেই তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শ মেনে চলেন। বিশেষ করে জৈব সার ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়ায় ক্ষেতে কীটনাশকের ব্যবহার ছিল তুলনামূলকভাবে কম।
স্থানীয়রা জানান, শুরুতে অনেকেই ধারণা করেছিলেন একজন সংবাদকর্মী কৃষিকাজে তেমন সফল হতে পারবেন না, বরং লোকসানের আশঙ্কাই বেশি থাকবে। তবে সময়মতো পরিচর্যা, নিয়মিত তদারকি ও আধুনিক কৌশল প্রয়োগের ফলে সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে ক্ষেতে আপেলের মতো আকৃতির টমেটো পাকতে শুরু করেছে। মৌসুমের শুরুতে বাজারে টমেটোর দাম ভালো থাকায় উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ ঠিক থাকলে তিনি উল্লেখযোগ্য লাভের ব্যাপারে আশাবাদী। টমেটো চাষি হামিদুর রহমান বলেন, “আমাদের মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে টমেটো চাষ হয়ে থাকে। এ বছর আমি শখের বশে ৪০ শতক জমিতে টমেটো আবাদ করেছি। অনেকে বলেছিল, সংবাদকর্মী হিসেবে আমি কৃষিকাজে ব্যর্থ হব। কিন্তু কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ ও নিজের আন্তরিক পরিচর্যার কারণে আমি সফল হয়েছি। জৈব সার বেশি ব্যবহার করায় গাছ সুস্থ আছে এবং ফলনও ভালো হচ্ছে।”
চৌমুহনী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “কৃষি একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম। সঠিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করলে যে কেউ কৃষিতে সফল হতে পারে। হামিদুর রহমান সময়মতো জমির পরিচর্যা, সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা করায় ভালো ফলন পেয়েছেন। সচেতন ও শিক্ষিত মানুষ কৃষিতে এগিয়ে এলে দেশের কৃষিখাত আরও সমৃদ্ধ হবে।”
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব সরকার জানান, “বর্তমান সরকার কৃষিকে লাভজনক করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, উন্নত জাত এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুসরণ করলে টমেটোসহ যেকোনো ফসলেই ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। হামিদুর রহমানের সফলতা অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। এ ধরনের উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কৃষিতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”