নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
নবীগঞ্জ উপজেলার ৯নং বাউসা ইউনিয়নের দেবপাড়া (বাঁশডর) গ্রামে বসতঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে চাঁদা দাবি প্রাণনাশের হুমকি নির্মাণ সামগ্রী লুট ও হামলার অভিযোগে আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী মোঃ ইছমত আলী দীর্ঘদিন ধরে তার নিজস্ব জমিতে বসবাস করে আসছিলেন। বসতঘর জরাজীর্ণ হওয়ায় তিনি নতুন করে ঘর নির্মাণ শুরু করলে প্রতিবেশী শহিদ মিয়া, আকামত উল্লা, লোকমান মিয়া, সাজন মিয়া, জাগির মিয়া, মকবুল হোসেন, মামদ মিয়া ও সামাদ মিয়া বাধা সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ করা হয়।
ইছমত আলীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অভিযুক্তরা বেআইনিভাবে তার বসতবাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় নির্মাণসামগ্রী পাহারায় থাকা ইব্রাহিম মিয়াকে জোরপূর্বক একটি ঘরে আটকে গামছা ও দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে একটি ট্রলি গাড়িতে করে প্রায় ২৫ হাজার ৯৫৭ টাকার নির্মাণসামগ্রী লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। নিরুপায় হয়ে ইছমত আলী গত ৯ ডিসেম্বর আবার ঘরের কাজ শুরু করলে বিকাল আনুমানিক ৪টার দিকে অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে এসে নির্মাণ বন্ধের চাপ সৃষ্টি করে এবং ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ঘর নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। একইদিন রাত আনুমানিক ২টার দিকে তালা ভেঙে বসতঘরের জন্য রাখা তিন সুতি ৩ বান্ডিল রড (প্রায় ২৫১ কেজি), যার আনুমানিক মূল্য ২১ হাজার ২০৯ টাকা, একটি পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ইছমত আলী বাদী হয়ে শহিদ মিয়া, নিয়ামত উল্লা, আকামত উল্লা, লোকমান মিয়া, সাজন মিয়া ও সামাদ মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৭টার দিকে ইছমত আলীর বোন রাবেকা বেগম ভাইয়ের বসতঘরে নির্মাণসামগ্রী সরানোর বিষয়টি দেখতে গেলে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। হামলায় লোহার রডের আঘাতে তার ডান হাতের কবজি ভেঙে যায়। এছাড়া তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় রাবেকা বেগম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আকামত উল্লা, শহিদ মিয়া ও লোকমান মিয়াকে আসামি করে পৃথক মামলা দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।